মো:শাহরিয়া
রাতের অন্ধকারে তারা কবর খুঁড়ে সদ্য মৃত দেহ চুরি করে নিয়ে যেতো মেডিকেল কলেজে বিক্রি করার জন্য। পরিবার ও সমাজ রীতিমতো আতঙ্কে !
এই ভয়াল অবস্থা থেকে বাঁচতেই তৈরি হয় এক অভিনব কৌশল—
মর্টসেফ (Mortsafe) — এক ধরনের ভারি লোহার খাঁচা বা শক্ত কাঠামো , যা সদ্য সমাধিস্থ মৃতদেহের উপর বসানো হতো। যেন কবর খুঁড়লেও লাশে হাত দিতে না পারে চোরেরা!
কীভাবে কাজ করত মর্টসেফ?
সাধারণত ৬ সপ্তাহ থেকে ২ মাস পর্যন্ত কবরের উপর বসিয়ে রাখা হতো এই কাঠামো।
যতদিন না মৃতদেহ পচে চিকিৎসা শিক্ষায় অপ্রয়োজনীয় হয়ে যেত, ততদিন রাখা হতো এই নিরাপত্তা।
এরপর মর্টসেফ খুলে এনে অন্য নতুন কবরের উপর বসানো হতো।
মর্টসেফের নকশা ছিল বৈচিত্র্যময়
কখনো মাটির গভীরে বসানো লোহার দণ্ড ও পাথরের জালি
কখনো ধাতব ফ্রেমে কাঠের সেফটি কভার
কখনো কেবল লোহার ঘন খাঁচা
এতটাই শক্তভাবে বসানো হতো যে তুলে নেওয়া প্রায় অসম্ভব!
১৮৩২ সালের Anatomy Act পাস হওয়ার পর এই লাশচোর পেশা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়। আইনের মাধ্যমে মেডিকেল শিক্ষায় মৃতদেহ সরবরাহ সহজ হয়, আর মর্টসেফ হয়ে পড়ে ইতিহাসের এক রহস্যময় নিদর্শন ।
আজও কিছু পুরোনো কবরখানায় দেখা মেলে মর্টসেফের চিহ্ন—এক সময়ের আতঙ্ক আর আত্মরক্ষার প্রতীক হিসেবে।
এই ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়—
যে সমাজে বৈজ্ঞানিক উন্নতির জন্য লড়াই চলে, সেখানে নৈতিকতা, ভয় আর প্রতিরোধ—তিনটি হাত ধরাধরি করে হাঁটে…