মো:শাহরিয়া
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা প্রতিনিধি
সরকারি নাম: লিবিয়া রাষ্ট্র রাজধানী: ত্রিপোলি
ভাষা: আরবি তবে বারবার, তামাজিঘ, ইংরেজিও
কিছুটা প্রচলিত মুদ্রা: লিবিয়ান দিনার
ধর্ম: ইসলাম প্রায় ৯৭% সুন্নি মুসলিম
ভৌগোলিক অবস্থান
লিবিয়া উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ এই দেশের
উত্তরে: ভূমধ্যসাগর পূর্বে: মিশর দক্ষিণ-পূর্বে: সুদান
দক্ষিণে: চাদ ও নাইজার পশ্চিমে: আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়া
অর্থনীতি
তেল ও গ্যাস: লিবিয়ার অর্থনীতির মূল ভিত্তি। তেল রপ্তানির উপর প্রবলভাবে নির্ভরশীল।
বেকারত্ব: রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেকারত্ব বেশি, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।
বিদেশি কর্মসংস্থান: বাংলাদেশসহ অনেক দেশের শ্রমিক লিবিয়ায় কাজ করে থাকেন, বিশেষ করে নির্মাণ, কৃষি ও সেবা খাতে।
রাজনীতি ও ইতিহাস (সংক্ষেপে)
স্বাধীনতা: ১৯৫১ সালে ইতালির কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
গাদ্দাফির শাসন: কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি ১৯৬৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচারীভাবে দেশ শাসন করেন।
২০১১ বিপ্লব: আরব বসন্তের সময় গণআন্দোলনে গাদ্দাফির পতন ঘটে এবং তিনি নিহত হন।
এরপর থেকে দেশে গৃহযুদ্ধ, বিভক্ত সরকার, এবং মিলিশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল তৈরি হয়।
প্রধান শহরসমূহ
ত্রিপোলি (Tripoli): রাজধানী, পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান শহর – বেনগাজি (Benghazi): পূর্বাঞ্চলের বড় শহর ও বাণিজ্য কেন্দ্র – মিসরাতা, সাবহা, আল বায়দা: অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহর।
বর্তমান পরিস্থিতি (২০২৫ অনুযায়ী)
নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল অনেক এলাকায়।
বিভিন্ন অঞ্চল ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ও সামরিক গোষ্ঠীর অধীনে।কিছু জায়গায় উন্নয়ন কাজ ও শান্তি ফেরানোর চেষ্টাও চলছে।
গাদ্দাফির শাসনামলে লিবিয়ার জনগণের সুবিধাসমূহ
১. বিনামূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা
স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্রি শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল, বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি বৃত্তি দেওয়া হতো।
হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ওষুধপত্র প্রায় সবকিছু বিনামূল্যে সরবরাহ করা হতো।
এই ব্যবস্থাগুলো ছিল আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উন্নত।
২. বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি ফ্রি বা অত্যন্ত সস্তা
ঘরে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস — এগুলোর জন্য মাসিক বিল ছিল নামমাত্র বা একদমই ফ্রি।
পেট্রোল ছিল প্রায় বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা।
৩. বিনামূল্যে বাসস্থান ও জমির সুযোগ
গাদ্দাফি ঘোষণা দিয়েছিলেন:
ঘর হলো মানুষের মৌলিক অধিকার।”
অনেক পরিবারকে সরকারিভাবে ফ্রি ঘর বা জমি দেওয়া হতো এবং যারা বিয়ে করতো, তাদের সরকার ঘর বানাতে সাহায্য করতো বা অর্থ দিতো।
৪. বেকার ভাতা ও নবদম্পতির জন্য সহায়তা
বেকারদের জন্য ভাতা বা চাকরি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত সহযোগিতা চালু ছিল,নতুন বিয়ে হলে সরকার থেকে অনুদান (মাঝে মাঝে গাড়ি বা ঘর) দেওয়া হতো।
৫. অসাধারণ উন্নয়ন প্রকল্প – ‘The Great Man-Made River’
গাদ্দাফি সাহারা মরুভূমির নিচ থেকে বিশাল পানি উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পানি সরবরাহ করেন, এটিকে বলা হয় “বিশ্বের ৮ম আশ্চর্য” — কারণ এটি আফ্রিকায় সবচেয়ে বড় পানির প্রকল্প।
৬. ঋণ ছিল সুদমুক্ত (Interest-Free Loans)
ঘর বানানো, ব্যবসা শুরু, বিয়ে— এসবের জন্য সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হতো।
৭. কোনো বৈদেশিক ঋণ বা বিশ্বব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছিল না
গাদ্দাফি IMF বা World Bank-এর কাছ থেকে ঋণ নেননি, যাতে দেশের সম্পদ ও সিদ্ধান্ত স্বাধীন থাকে,লিবিয়ার তেল রপ্তানির টাকা জনগণের উন্নয়নে ব্যবহার করতেন।
৮. নারীদের জন্য শিক্ষা ও কাজের সুযোগ
লিবিয়ায় নারীরা স্কুল, কলেজে পড়তে পারত এবং সরকারিভাবে চাকরি করতে পারত,অনেক নারীরাই ডাক্তার, শিক্ষক, প্রকৌশলী, এমনকি সৈনিক পর্যন্ত হতে পেরেছিল।