অভিবাসন ও মানব পাচার রোধে লিবিয়ার উপকূলীয় নিরাপত্তা বাহিনী ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি পরিচালিত এক বিশেষ টহল অভিযানে দুটি লোহার তৈরি নৌকা জব্দ করা হয়েছে, যেগুলো অভিবাসীদের ইউরোপগামী সমুদ্র পথে অবৈধভাবে পারাপারের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
নৌকাগুলো জব্দ করার পর সেগুলো পূর্ব লিবিয়ার টোবরুক শহরের আল-বুতনান নিরাপত্তা অধিদপ্তরের অধীনে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যুরোতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই অভিযান এবং জব্দকরণ কার্যক্রম লিবিয়া সরকারের মানব পাচার রোধে গৃহীত কঠোর অবস্থান ও প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, নৌকা দুটিতে পাচারকারীরা বড় সংখ্যক অভিবাসী বহনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে বাহিনীর দ্রুত ও কার্যকর অভিযানে তা ভেস্তে যায়। নৌকাগুলো এখন তদন্তের জন্য সংরক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, লিবিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইউরোপগামী অভিবাসীদের জন্য একটি প্রধান ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অভ্যন্তরীণ সংঘাত, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা ও মানব পাচারকারীদের সক্রিয় চক্রের কারণে দেশটি একাধিকবার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তবে সম্প্রতি, লিবিয়া সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠেছে। উপকূলীয় এলাকা ও সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং পাচারকারী নেটওয়ার্কগুলোকে ভেঙে দিতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের অভিযানে শুধুমাত্র পাচার প্রতিরোধই নয়, বরং হাজারো জীবন রক্ষার সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। কারণ, এইসব নৌযাত্রা প্রায়ই দুঘর্টনাপূর্ণ ও প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোও লিবিয়ার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আরও কার্যকর আন্তর্জাতিক সমন্বয় গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে, যেন এই সংকট দীর্ঘমেয়াদে মোকাবিলা করা যায়।