গাজীপুরে দুই সাংবাদিকের উপর পরপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ গণশক্তি দল (বিজিডি) গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দলটির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’-এর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে গলা কেটে হত্যা এবং ‘দৈনিক বাংলাদেশের আলো’ পত্রিকার সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণ করে দেশে সাংবাদিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।”
উল্লেখ্য, নিহত সাংবাদিক তুহিন ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ফুটপাতের চাঁদাবাজি নিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন। ওই লাইভের জের ধরেই রাত ৮টার দিকে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এর আগের দিন, আনোয়ার হোসেন সৌরভকে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে পা থেঁতলে দেয়, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্য উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
বাংলাদেশ গণশক্তি দল একে “গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে:
১. সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার।
২. আনোয়ার হোসেন সৌরভের উপর হামলার সঙ্গে জড়িত সকল সন্ত্রাসী ও দায়িত্বে অবহেলা করা পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা।
৩. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ।
৪. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন।
দলটির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করে কোনো রাষ্ট্রের গণতন্ত্র টিকতে পারে না। এই বর্বরতা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ।”
বিজিডি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়া পর্যন্ত সংগঠনটি সারাদেশে সাংগঠনিকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। তারা স্লোগান তোলে –
“সাংবাদিক হত্যা বন্ধ করো – সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাও!
মুক্ত সাংবাদিকতা বাঁচাও – জনগণের কণ্ঠ বাঁচাও!”
সাংবাদিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকেও এই ঘটনায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
গাজীপুরে এ ধরনের পরপর দুটি হামলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।