১১ আগস্ট ২০২৫, বেনাপোল, যশোর — বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ছায়া ফেলে আসা ছিনতাই ও প্রতারণার গোপন সিন্ডিকেটের ১১ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই চক্র ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত অসহায় পাসপোর্টধারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এবং মেডিকেল ভিসায় ভারতের উদ্দেশ্যে যাওয়া রোগীদেরকে বিশেষভাবে টার্গেট করছিল, তাদের সঙ্গে থাকা অর্থ ছিনিয়ে নিয়েছে। সামাজিক অবক্ষয় ও নিরাপত্তাহীনতার এই অন্ধকার সময়ে প্রায় এক দশক ধরে এই চক্র বেনাপোলের ভাবমূর্তিতে কলঙ্ক সংযোজন করছিল।
গ্রেফতারদের অধিকাংশই বড় আঁচড়া ও সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানায়, তারা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অপরাধ চালিয়ে আসছিল যা এলাকার শান্তি ও নিরাপত্তাকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলেছে।
বেনাপোল থানা পুলিশের কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট সব প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। সাংবাদিকদের সহায়তায় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন ও সুনামের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, যা কেউ বরদাশত করতে পারে না।”
বর্তমানে সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের মধ্যে কেউ কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সাংবাদিক মহল ও প্রশাসন মিলিয়ে এক যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে অপরাধী চক্র সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেনাপোলের সমাজ ও ব্যবসায়িক নেতারা পুলিশের কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এই ধরনের অপকর্ম বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
যশোর জেলার পুলিশ সুপার জনাব রওনক জাহানের নির্দেশনা অনুযায়ী বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোট ১১ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত ৮ জন এবং নিয়মিত মামলার ৩ জন আসামী রয়েছে।
অভিযানটি পরিচালনা করেন এসআই (নিঃ) মানিক কুমার সাহা, পবিত্র বিশ্বাস, মোঃ খায়রুল ইসলাম, মোঃ রাশেদুজ্জামান, এএসআই (নিঃ) মোঃ ইমদাদুল হক, মোঃ হাবিবুর রহমান, সুজন ও মোঃ সবুজ আলীসহ সংগীয় ফোর্স। অভিযানটি ১১ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে বেনাপোল পোর্ট থানার বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত হয়।
গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে একই দিনে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত আসামীদের নাম ও ঠিকানা:
১। মোঃ মাসুম (৪০), পিতা- নজরুল ইসলাম, সাং- বড় আচঁড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
২। মোঃ মোমিনুর (২১), পিতা- জমির হোসেন, সাং- গাতিপাড়া (উত্তরপাড়া), থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৩। মোঃ সোয়েব আক্তার (২৮), পিতা- আমজাদ হোসেন, সাং- বড় আচঁড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৪। মোঃ মিয়ারাজ হোসেন (৩০), পিতা- মোঃ ইশারত, সাং- সাদীপুর, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৫। নজরুল, পিতা- মৃত শহিদুল ইসলাম, সাং- তলশেরী হাসপাতাল পাড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৬। মোঃ মাসুম শেখ (৩০), পিতা- সালাউদ্দিন শেখ, সাং- শ্রীরামকান্দি, বাগেড়বাড়ী, থানা- টঙ্গীপাড়া, গোপালগঞ্জ, এপি সং- ভবেরবেড় পশ্চিমপাড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৭। মোঃ বাবু (৩০), পিতা- মোঃ আনোয়ার হোসেন, সাং- বড় আচঁড়া (মাঠপাড়া), থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৮। মোঃ আবু সাঈদ ব্যাপারী (২৬), পিতা- মুনছুর আলী মুন্সি ব্যাপারী, মাতা- নাছিমা বেগম, সাং- ভবেরবেড় (পশ্চিমপাড়া), থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
নিয়মিত মামলার আসামীদের নাম ও ঠিকানা:
১। মোঃ রনি হোসেন (২৫), পিতা- মোঃ আকরম আলী, গ্রাম- পুটখালী (পশ্চিম পাড়া), থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
২। মোঃ ইসমাইল হোসেন (২৬), পিতা- মোঃ আহম্মদ আলী, গ্রাম- বড় আচঁড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
৩। মোঃ তহিদুল ইসলাম (২৪), পিতা- ইসমাইল হোসেন, গ্রাম- বড় আচঁড়া, থানা- বেনাপোল পোর্ট, জেলা- যশোর।
পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও অপরাধ দমনে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে।
ছবি সংগৃহীত: সাংবাদিক আজিজুল হক সময় টিভি
উপদেষ্টা : মো: শরিফ হোসেন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: শাহরিয়া
প্রধান কার্যালয় : কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা, ২নং দুর্গাপুর, দিগীরপাড়, কুমিল্লা
Design and Develop By Coder Boss