দেশের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারি—কোনো ক্ষেত্রই আজ অপরাধের থাবা থেকে মুক্ত নয়। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল, এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্য পর্যন্ত—প্রতিটি স্তরে এই অনিয়ম ছড়িয়ে পড়েছে। আর এসব অপরাধ উন্মোচনে সাহসী ভূমিকা রাখা সাংবাদিকরাও আজ হয়ে উঠছেন নির্যাতনের শিকার।
স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি-বেসরকারি খাতে ঘুষ যেন নিত্যদিনের ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি সেবা পেতে ঘুষ ছাড়া উপায় নেই। অপরদিকে, বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পরিবহন খাত, হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান—সবখানেই চাঁদাবাজির রমরমা ব্যবসা চলছে।
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জড়িয়ে নারী কেলেঙ্কারি ও যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নারীর সম্মানহানি ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ একের পর এক প্রকাশ্যে আসছে। এতে সমাজের নৈতিক ভিত্তি গভীর সংকটে পড়ছে।
সত্য প্রকাশের দায়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা, হুমকি ও হয়রানির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। মাঠপর্যায়ে কাজ করা প্রতিবেদকরা চাঁদাবাজ চক্র, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এমনকি রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। মামলার ভয়, শারীরিক আক্রমণ, ব্ল্যাকমেইল—এসবই সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিকরা কোনো অপরাধে জড়িত নন; তারা শুধু জনগণের সামনে সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করছেন।
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দুর্নীতি ও অপরাধ উন্মোচন কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য সাংবাদিক সুরক্ষা আইন কার্যকর প্রয়োগ, নির্যাতনকারীদের দ্রুত বিচার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।
দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও নারী কেলেঙ্কারি সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি। এর বিরুদ্ধে যারা কলম ধরছেন, সেই সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করলেই কেবল সত্য প্রকাশের পথ সুগম হবে।