বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজজীবনে আমরা প্রায়শই একটি ভুল ধারণার শিকার হই—চাঁদাবাজরা নাকি নির্দিষ্ট কোনো দলের। আসলে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। চাঁদাবাজের কোনো দল নেই, কোনো আদর্শ নেই, নেই জনগণের কল্যাণে কাজ করার আন্তরিকতা। তাদের একমাত্র দল হচ্ছে ব্যক্তিগত স্বার্থ, আর একমাত্র আদর্শ হচ্ছে টাকার লোভ।
চাঁদাবাজরা সবসময় ক্ষমতার ছায়ায় আশ্রয় খোঁজে। আজ যদি একটি দল ক্ষমতায় থাকে, তারা সে দলের নাম ব্যবহার করে। আবার কাল যদি অন্য দল আসে, তখন তারা দলবদল করে নতুন রঙে রঙিন হয়ে যায়। এভাবেই চাঁদাবাজরা কখনো লাল-সবুজ, কখনো নীল-হলুদ রঙে নিজেদের সাজায়, কিন্তু ভেতরে তাদের রঙ সর্বদা একই—কালো।
চাঁদাবাজির শিকার হয় সাধারণ মানুষ। হোক সে দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কিংবা পরিবহন শ্রমিক—প্রতিদিন কোথাও না কোথাও তাদের কষ্টার্জিত অর্থ কেড়ে নিচ্ছে এই দানবেরা। তারা সমাজের শান্তি নষ্ট করে, মানুষের পরিশ্রমের ফসল লুট করে, আর দেশের ভাবমূর্তি কলুষিত করে। অথচ অদ্ভুতভাবে, সুযোগ পেলেই তারা রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।
এ কারণে প্রয়োজন স্পষ্ট একটি সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থান:চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়া। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সবার কাছে বার্তা দেওয়া যে চাঁদাবাজদের জায়গা কেবল জেলের ভেতরে।
যারা তাদের আশ্রয় দেয়, সেই নেতাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা।
রাজনীতি হতে হবে জনগণের সেবার হাতিয়ার, ব্যক্তিগত অর্থলোভের অস্ত্র নয়। চাঁদাবাজি কোনো দলের নীতি হতে পারে না, আর যারা এ কাজে লিপ্ত, তারা জনগণের শত্রু। তাই আজকের মূল বার্তা স্পষ্ট—চাঁদাবাজ কোনো দলের নয়, সে কেবল সমাজের বোঝা এবং দেশের অগ্রগতির অন্তরায়।