বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন
Title :
কাটাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে ইউসুফ মোল্লা টিপুর মানবিক উদ্যোগ “বি.আই.আর.সি” প্রধান উপদেষ্টা হলেন – এডভোকেট শেখ শওকত হোসেন ফরহাদ অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ ৩ দফা দাবিতে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে”—তারেক রহমান ভোলাহাটে ভার্ক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবৃত্তির চেক প্রদান অনুষ্ঠিত! অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাসের সাঁড়াশি অভিযান, জরিমানা আদায় রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নে নিবন্ধন বিলম্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের যতসব কীর্তন! “তনুর বয়স হতো আজ ২৯: নয় বছরেও বিচারহীন সোহাগী জাহান তনুর হত্যা মামলা” উঁচু মঞ্চের আড়ালে জনগণের নীরব কান্না ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপির কমিটিতে ত্যাগীদের পরিবর্তে স্থান পেয়েছে আওয়ামী লীগের দোসররা!

বিএনপি নেতা নাসিম বাহিনীর নেতৃত্বে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও জমিদখল

Coder Boss
  • Update Time : সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:

 

ভোলার লালমোহনে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়ার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে।

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় প্রভাবশালী কৃষক দল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম-আহ্বায়ক ও লালমোহন ইউনিয়ন বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম মাতাব্বর, ইউপি সদস্য নুরুল আমিন লাঠিয়াল, মোঃ সেলিম, আবদুল মালেক, মোঃ জামাল মাতাব্বরের নেতৃত্বে তাদের বাহিনী শাজাহান মিয়ার বাসায় এই হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও জমি দখল করেন। চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়ার পরিবারের লোকদেরকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয় বিএনপি নেতা নাসিম মাতাব্বর ও সেলিম বাহিনী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ই আগস্ট বিকাল ৪টার সময় লালমোহন উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান বাজারে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা নাসিম মাতাব্বর ও ইউপি সদস্য নুরুল আমিন লাঠিয়াল, মোঃ সেলিম, আবদুল মালেক, মোঃ জামাল মাতাব্বরের নেতৃত্বে ১০০/১৫০ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়ার বাসার কেচি গেইটের তালা ভেঙ্গে বাসায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেন।

এসময় হামলাকারী নাসিম মাতব্বর ও সেলিম বাহিনী শাজাহান মিয়ার ঘরে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, জমি-জমার দলিলপত্র, ঘরে থাকা ফ্রিজ, এসিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র, লুটপাট করে নিয়ে যায়। ওই সময় বাসায় থাকা কাজের লোক আরাফাত ও মুন্নিকে বেধড়ক পিটিয়ে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে বাসার থাইগ্লাস, বাসার নিচের দোকানের শার্টার ও চেয়ারম্যানের নিজস্ব কার্যালয় ভাংচুর করে বিভিন্ন মালামার লুট করে নিযে যায় তারা।

চেয়ারম্যান বাজারে তাদের অন্যান্য ভাড়াটিয়া দোকানের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে তালা দিয়ে রাখে নাসিম মাতব্বর ও সেলিম বাহিনী। এছাড়াও নাসিম মাতব্বর, সেলিম, মালেক, জামাল বাহিনী শাজাহান মিয়ার দুইটি মাছ চাষের খামাসহ ক্রয়কৃত প্রায় ৭ একর জমি দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে নাসিম মাতব্বর ও ইউপি মেম্বার নুরুল আমিন লাঠিয়াল, সেলিম, আবদুল মালেক, মোঃ জামাল মাতাব্বরের বাহিনীর হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে এই পরিবারের সদস্যরা তাদের বাসায় প্রবেশ করতে পারছেন না।

হামলাকারী অভিযুক্তরা হলেন, নাসিম মাতাব্বর, ইউপি মেম্বার নুরুল আমিন লাঠিয়াল, মোঃ সেলিম, আবদুল মালেক, মোঃ জামাল মাতাব্বর, মোঃ জাবেদ, মিজানুর রহমান তুহিন, মোঃ নুরনবী, মোঃ সুজন, রাকিব, ইফতেখার উদ্দিন জুয়েল, হাসিম মাওলানা, মোঃ তাজিম, মোঃ আরমান, মোঃ শরীফ, ইকবাল হোসেন, মোঃ নিরব, মোঃ মফিজুল ইসলাম, মোঃ আশিক, মোঃ জহির, ওয়াসিম। অভিযুক্ত হামলাকারীরা লালমোহন ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা।

এই হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় চেয়ারম্যান এর স্ত্রী হাসিনা খানম লালমোহন থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন গেলে পুলিশের সাথে বাদী হাসিনা খানম যান। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতিতে অভিযুক্তরা বাদীকে মানসিক নির্যাতন ও মারধর করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন বলেও জানান তারা।

মাছের ঘের ও ফসলি জমি লিজ নেওয়া কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমি দীর্ঘ কয়েক বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়ার কাছ থেকে লিজ নিয়ে মাছ চাষ ও শাকসবজি উৎপাদন করে আসছি। শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পরের দিন নাসিম মাতব্বর, সেলিম, জামাল, মান্নান বাহিনী আমার ঘেরের সকল মাছ, রূপণ করা ৪শ’ কলাগাছ, ৫শ’ পেপে গাছ, লাউগাছ কেটে ফেলে সবজি লুট করে নিয়ে যায়।

কাশেম ও তার স্ত্রী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, জীবনের সকল সঞ্চয় ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করে এই খামারটি গড়ে তুলেছি। এই খামার নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। ওরা আমার সব শেষ করে দিয়েছে। এই লুটতরাজদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি এবং ক্ষতিপূরণ দাবী করছি।

চেয়ারম্যানের স্ত্রী হাসিনা খানম বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর স্থানীয় সেলিম, আ: মালেক, জামাল মাতাব্বর, জাবেদসহ বিশাল বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার বাসায় হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। তারা ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, দলিলপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

কৃষক দল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম-আহ্বায়ক ও লালমোহন ইউনিয়ন বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম মাতাব্বরের নেতৃত্বে হামলাকারীয়ারা বাসা সংলগ্ন বিভিন্ন দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট সহ চেয়ারম্যান বাজারের ১০ থেকে ১২ টি দোকান দখল করেন।

তাদের হামলার ও দখলের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মসজিদও। তারা মসজিদের টয়লেটিও ভেঙ্গে ফেলে। আমার বাসার কাজের লোকদেরকেও মারধর পিটিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়। এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন যায়গায় ক্রয়কৃত জমির ফসল লুট করে নিয়ে জমিগুলো দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে তাদের ভয়ে আমরা চরম আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের বাসা খালি পড়ে রয়েছে। বাসায় উঠতে গেলে লোকজন নিয়ে এসে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।

এবিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে চাইলে তারা জানান, লালমোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়া এখানকার মানুষদের কাছ থেকে এই সম্পত্তি ক্রয় করেছেন।

চেয়ারম্যানের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, সরকার পতনের পর শতশত মানুষ চেয়ারম্যানের বাড়িঘরে হামলার জন্য এসেছেন বিএনপি নেতা নাসিম মাতাব্বর ও সেলিম বাহিনীর নেতৃত্বে। আমরা বাঁধা না দিলে একটি ইটও ঘরের থাকতো না। আমরা তার বাড়িঘর বিক্ষুব্ধ নাসিম মাতব্বর বাহিনির আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করেছি।

এবিষয়ে বিএনপি নেতা নাসিম মাতাব্বর এর সঙ্গে কথা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মাহাবুব উল আলম জানান, লালমোহন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাজাহান মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মদ হাসিনা খানম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘর ও দোকানপাট তালা মারার চাবিটি উদ্ধার করে বর্তমানে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের নিকট রেখে এসেছি। অভিযুক্তদেরকে এ বিষযে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102